শেখ খায়রুল ইসলাম,পাইকগাছা খুলনা প্রতিনিধি :  খুলনা সহ সারা দেশে আঁশফলের ভালো ফলন হয়েছে । বাজারে চাহিদা ও ভালো মূল্য থাকায় কৃষক ঝুকছেন আঁশফল চাষে লাভবান ও হচ্ছেন।

তবে ইঁদুর আর বাদুরের উপদ্রব থেকে আঁশফল রক্ষা করতে কৃষকদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। আঁশফল রক্ষার জন্য প্রতিটি গাছ নেট দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। আঁশফল এক প্রকার লিচু জাতীয় সু-স্বাদু ফল। এটি লংগান ও কাঠ লিচু নামে ও বেশ পরিচিত। এটি দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার উদ্ভিদ। এটি ক্রান্তীয় অঞ্চলের উদ্ভিদ। আঁশফল গাছ মধ্যমাকারের চির সবুজ যা ৬ থেকে ১০ মিটার পর্যন্ত লম্বা হয়ে থাকে। বেলে দোআঁশ মাটিতে এই গাছ বেশি জন্মে। আঁশফল গ্রাম বাংলার ঐতিহ্যবাহী ফল। একে বলা হয় গরীবের লিচু।

ফল হয় গোল আকারের, শাঁস সাদা, খুব রসালো ও মিষ্টি। এক সময় দেশের দক্ষিণ ও পূর্বাঞ্চলের মানুষ এই আঁশফল খেয়ে আষাঢ় উদযাপন করতেন। আপেল, কমলা, আঙ্গুর, লিচুতে আশক্ত হলেও এই ফলটির কদর কমেনি একটু ও। আঁশফল লিচু পরিবারের একটি সদস্য। ফলের উপেরভাগ মিশ্রণ, ফলের রং বাদামি, আকার গোল। লিচুর চেয়ে অনেক ছোট হলেও ফলের শাঁস অবিকল লিচুর মতো। ফল খেতে লিচুর মত বা লিচুর চেয়েও মিষ্টি। ফলের শাঁস সাদা চকচকে। আঁশফলের বীজ গোলাকার চকচকে কালো এবং শাঁস বীজকে আবৃত করে রেখেছে । যা সহজে আলাদা করা যায়। আঁশ ফলের বীজ থেকে চারা উৎপাদন করা যায়। বীজ থেকে উৎপাদিত গাছ হুবহু মাতৃগুণ বহন করে না। আর ফল ধরতে দীর্ঘ সময় লাগে। এটি গুটি কলম করে এর বংশ বিস্তার করা যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ আঁশফলের বেশ কিছু উন্নত মানের জাত প্রবর্তনের মাধ্যমে বিস্তার লাভ করেছে। বারি আঁশফল-১ ও বারি আঁশফল-২ নামে উন্নত জাত বাংলাদেশে সর্বত্র মুক্তায়ন করা হয়েছে। আঁশফলে বিভিন্ন খনিজ উপাদান, শর্করা ও ভিটামিন সি এর প্রচুর উপাদান পাওয়া যায়। আঁশফলের শুকানো শাঁস থেকে ভেজস ঔষধ তৈরী করা যায়। অবসাদ দূর করতে এর দারুণ সুনাম রয়েছে। হৃদযন্ত্রের সুরক্ষা ও সক্রিয় রাখতে আঁশফল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। চলতি মৌসুমে আঁশফলের ব্যাপক ফলন হয়েছে। আঁশফল বাজারে ১শ’ টি ফল ৮০ টাকা থেকে ১০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। এলাকার এক একটি আঁশফল গাছ পাইকারী ৮শ’ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পযন্ত বিক্রি হচ্ছে। ব্যবসায়ীরা গাছ থেকে আঁশফল পেড়ে স্থানীয় বাজারে খুচরা বিক্রি করছে। আঁশফল পাকা শুরু হলে ঝরে পড়ে তাছাড়া বাদুর আর ইঁদুর একবার টের পেলে দল বেঁধে এক রাতেই সব ফল খেয়ে ফেলে। এ জন্য আঁশফল গাছে নেট দিয়ে ঢেকে রাখতে হয় ইঁদুর আর বাদুরের হাত থেকে রেহায় পেতে। আঁশফলের স্বাদ আগস্ট মাস পর্যন্ত পাওয়া যায় বলে বাজারে এর কদর বেড়েছে। এর ফলে ব্যবসায়ীরাও লাভবান হচ্ছেন অনেক অংশে।